শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

লাইফ সাপোর্টে সোহেল রানা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। অভিনেতার স্ত্রী জিনাত বেগম এ তথ্য জানান।

সোহেল রানার ফুসফুস ৭০ ভাগ আক্রান্ত হয়েছে। ওষুধ কাজ করলেও তিনি বিপদমুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গুণী এই অভিনেতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি।

এর আগে গত শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোহেল রানা দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা এগারো জন’ প্রযোজনা করেন। প্রযোজক হিসেবেই চলচ্চিত্রে তার আগমন। এরপার ১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানার একটি গল্প অবলম্বনে মাসুদ রানা সিনেমার নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই সিনেমার মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন।

বরেণ্য অভিনেতা, নির্মাতা ও প্রযোজক বীর মু্ক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ২০১৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিকট থেকে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

বাংলা চলচ্চিত্রের ড্যাশিং হিরো সোহেল রানাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সত্তরের দশকের মাঝ থেকে আশির দশক পর্যন্ত তিনি সুপারস্টার ইমেজে ঢাকাই ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার মূল্যায়নও দর্শক করেছেন। তিনি দর্শকদের অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন।

পারভেজ ফিল্মসের কর্ণধার প্রযোজক ও পরিচালক সোহেল রানা ছিলেন অনন্য রুচির ধারক। বৈচিত্র্যময় কাজ করতে পছন্দ করতেন, হোক তা অভিনয়ে, সংগীতে, মারপিট দৃশ্য চিত্রায়নে, কাহিনী নির্বাচনে অথবা শিল্পী মনোনয়নে। তিনি ঢাকাই বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রে কিছু অসাধারণ ছবি উপহার দিয়েছেন। তার নিত্যনতুন মারামারির কৌশল আর পর্দায় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন উপস্থিতি দর্শকদের আন্দোলিত করেছে বহুবার। কি রোমান্টিক আর কি অ্যাকশন মুভি! সব ধরনের ছবিতেই সোহেল রানা ছিলেন সফল। তার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে পরিচালক খসরু নোমান নির্মাণ করেন ‘সোহেল রানা’ চলচ্চিত্রটি। বাংলাদেশে কোনো সিনেমার নায়কের নামে প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র।

চলচ্চিত্র জগতের বাইরে রাজনীতিতেও সোহেল রানার বিচরণ ছিল। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা ছিলেন। ২০০৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন, তিনি জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর চলতি বছরের অক্টোবরে তিনি এই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

চিত্রজগত/ঢালিউড

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়