মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

উপমহাদেশের বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী কিশোর কুমারের জন্মদিন আজ

সংগৃহীত ছবি -- চিত্রজগত.কম

উপমহাদেশের বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী কিশোর কুমারের জন্মদিন আজ। ১৯২৯ সালের ৪ আগষ্ট তিনি জন্মগ্রহন করেন। তার মৃত্যু দিন ১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর।তার পারিবারিক নাম আভাষ কুমার গঙ্গোপাধ্যায়।তিনি ছিলেন গায়ক, গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, স্ক্রিপ্ট লেখক, চিত্রনাট্য লেখক এবং রেকর্ড প্রযোজক।

সাধারণত তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সর্বাধিক সফল এবং সর্বশ্রেষ্ঠ প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে বিবেচিত হন।

কিশোর কুমার গাঙ্গুলী, অশোক কুমার গাঙ্গুলী ও অনুপ কুমার গাঙ্গুলী -ছবি: ইন্টারনেট

কিশোর কুমার বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছিলেন যার মধ্যে রয়েছে বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, অসমীয়া, গুজরাটি, কন্নড়, ভোজপুরি, মালায়লম, ওড়িয়া, এবং উর্দু। এছাড়াও তিনি তার ব্যক্তিগত অ্যালবামেও বিভিন্ন ভাষায় গান করেছেন, বিশেষত তার বাংলায় গাওয়া গানগুলি সর্বকালের ধ্রুপদী গান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তিনি ৮ বার শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য গায়কের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন এবং একই বিভাগে সর্বাধিক ফিল্মফেয়ার পুরস্কার বিজয়ের রেকর্ড করেছেন। তাকে মধ্যপ্রদেশ সরকার কর্তৃক লতা মঙ্গেশকর পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং তার নামে হিন্দি চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য কিশোর কুমার পুরস্কার প্রদান চালু করে।

সাধারণত গায়ক হিসাবে তাকে দেখা হলেও তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতাও ছিলেন। তার অভিনীত বিখ্যাত কয়েকটি কমেডি চলচ্চিত্র রয়েছে।এছাড়া অন্যান্য সিনেমার ভিতর রয়েছে নোকরি, বন্দী, দূর গগন কি ছাঁও মে, দূর কা রাহি প্রভৃতি।

কিশোর কুমার মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়াতে এক মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা কুঞ্জলাল গাঙ্গুলি ছিলেন একজন আইনজীবী। তাঁর মার নাম ছিল গৌরী দেবী। কিশোর কুমারের ছোটবেলায় নাম ছিল আভাস কুমার গাঙ্গুলি। চার ভাই বোনের ভিতর কিশোর ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। সবথেকে বড় ছিলেন অশোক কুমার তারপর সীতা দেবী। তারপর অনুপ কুমার আর অনুপ কুমারের থেকে পাঁচ বছরের ছোট ছিলেন কিশোর কুমার।

কিশোরের শৈশবকালীন সময়েই তাঁর বড়দা অর্থাৎ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অশোক কুমার বোম্বেতে হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে বড় সাফল্য পান। এই সফলতা ছোট্ট কিশোরের উপরে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ছোটবেলা থেকেই কিশোর বিখ্যাত গায়ক কুন্দন লাল সায়গলের একজন বড় ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সায়গলের গানগুলো অনুকরণ করতেন বা নকল করে গাইতেন। এছাড়াও তাঁর বাড়ির লোক তাঁকে দাদা অশোক কুমারের বিখ্যাত গান “মেঁ বন কে পঞ্ছী বন বন কে” বার বার গাইতে বলতেন। অশোক কুমারের সাফল্যের পর কিশোরের আরেক দাদা অনুপ কুমারও বোম্বের হিন্দি সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন।

১৯৫০ সালে বাঙালি অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতাকে বিয়ে করেন। ৫৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। নিজেদের প্রযোজনার সিনেমা ‘চালতি কা নাম গাড়ি’তে কাজ করার সময় মধুবালার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন তাকে। ১৯৬৯ সালে মধুবালার মৃত্যু পর্যন্ত এই বিয়ে টিকে ছিল। যদিও কিশোর কুমারের পরিবারের সদস্যরা এই বিয়ে কখনও মেনে নেয়নি। কারণ মধুবালা ছিলেন মুসলমান।

“দুজনে এক সঙ্গে থাকাকালে মধুবালা ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এই রোগে বেঁচে থাকার কোন আশা নেই ভেবে মধুবালার কোন চিকিৎসা কিশোর কুমার করেন নাই।মধুবালা অনেকটা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। তারপর কিশোর কুমার “চতুর্থ বার “১৯৮০ সালে বিয়ে করেন অভিনেত্রী “লীনা চন্দ্রভারকারকে”। ১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর কিশোর কুমারের মৃত্যু পর্যন্ত এই বিয়ে টিকে ছিল।”

চিত্রজগত/সঙ্গীত

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়