শনিবার, ১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সারাদেশে বন্যার ভয়াল পদধ্বনি

বর্ষার শুরুতেই সারাদেশে বন্যার পদধ্বনি। সিলেটে টানা ১৬/১৭দিনে বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের প্রায় দুই লাখ মানুষ পারি বন্দিও বিদ্যুৎবিহীন সময় কাটাচ্ছে। সিলেটে উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী নেমেছে। মানুষ মানবতের জীবনযাপন করছে।

সংবাদে জানা যায়, উত্তরবঙ্গেও বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা থেকে ওঠানামা করছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে আজ দুপুর ১২টার দিকে একই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার তিস্তাবেষ্টিত পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম মিলিয়ে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এতে চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। এর আগে গত রোববার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তাবেষ্টিত চর ও গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।

পানি ঢুকেছে সিলেট শহরেও। জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে। সুনামগঞ্জের পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন: শহরের সব রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রয় নেওয়ার জায়গাও খুব একটা নেই। শহর পুরোটাই ডুবে গেছে। মানুষ বাড়িঘরে আটকা পড়েছে। আমরা সাধ্যমত তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে প্রচুর নৌকা প্রয়োজন। দুর্গতদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছসেবীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সে কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে পূর্বাভাসে।

আমরা মনে করি, এই সময়টাতে বাংলাদেশে যেহেতু প্রায়শই বন্যা হয় সেহেতু এই ব্যাপারে সরকারে আগাম সতর্কতার প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ ভাটির দেশ বলে দুর্যোগ মোকাবেলার সার্বিক প্রস্তুতি থাকা দরকার। শুধু সিলেট ও সুনামগঞ্জ নয় দেশের উত্তরাঞ্চলেও বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিবারই মানুষের সীমাহীন কষ্টের পর কেন প্রশাসনের টনক নড়ে? তাদের পূর্বপ্রস্তুতি থাকে না কেন?

চিত্রজগত/সম্পাদকীয়

সংশ্লিষ্ট সংবাদ